পোস্টগুলি

সেপ্টেম্বর, ২০২৩ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

ভক্তির ভাষা

ছবি
রোজার মাস। অন্য সময় যারা মসজিদের ধারে কাছে যায় না তারাও এখন নিয়মিত নমাজ-কালাম পড়ছে। মন দিয়েই পড়ছে। নমাজের সময়ের আগেই গ্রামের তরুণরা মসজিদে আসতে শুরু করছে। সুমনের সঙ্গে আরো কয়েকটা ছেলে মসজিদের কাছে এলো। নমাজের এখনো অনেক দেরি। হয়তো মসজিদের বারান্দায় বসে গল্প করবে ওরা। আজান হলে নমাজ পড়বে। গ্রামের আধাপাকা মসজিদ। সামনে পুকুর। পুকুরে অজু করছিল সুমন। সঙ্গী জহির, তাহের, তারেক ও হাফিজ আগে অজু করে মসজিদের দিকে গেল। তাহের ডাক দিলো : সুমন ভাই, দেখে যাও অবস্থা!  Photo Credit: https://cdn.dhakapost.com/media/imgAll/BG/2023February/untitled-1-20230218025655.jpg গল্পটি অন্বেষা প্রকাশন থেকে প্রকাশিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাহিত্য সংসদের গল্প সংকলন কিচ্ছা’য় প্রকাশিত হয়। সুমন অজু শেষ করে দরজার সামনে আসতেই তারেক দেখিয়ে দিলো--খালি পা দুটো চৌকাঠের বাইরে রেখে কেউ একজন শুয়ে আছে। বয়স্ক লোক। ভালো করে দেখতেই দেখা গেলÑবৃদ্ধ বারুই, এই এলাকায় পান-সুপারি ফেরি করেন। নজরে এলো--দেয়াল ঘেঁষে রাখা পান ফেরি করার থালা।  হাফিজ অবাক হয়ে বললো : সে কি! হিন্দু মানুষ মসজিদে কেন? সুমন ওদের থামিয়ে দিয়ে বললো : এদিকে এসো। ওরা অন...

Sheikh Farid-ud-Din Attar and the Development of Sufi Literature

ছবি
Photo Credit: https://munawarbookstore.com/wp-content/uploads/Munawar-Book-Store-449.jpg Renowned Sufi Sheikh Farid-ud-Din Attar is one of the pioneers of Sufi literature. He is one of the legendary figures of the golden age of Persian literature. Even today, this great man is admired by knowledge-seeking mystic thinkers all over the world. There are many differences of opinion regarding the date of birth and death of Attar. Born almost a thousand years ago, this great man may not have gained popularity in that sense in his lifetime. Notably, he lived to be 100 years old (1145-1248 AD). Very little is known for sure about his life. His full name is mentioned as Farid-ud-Din Abu Hamid Muhammad bin Ibrahim. He is better known as 'Attar' which means 'fragrant'. According to reliable sources, one day Attar was sitting at the door of his shop with a friend. At that time a saint was passing by. He looked inside the store and sighed and sighed. Attar told her to leave, thin...

অসীম শিশুর খেলার ফড়িং

ছবি
ফড়িং উড়ছে। উড়ে উড়ে এখানে ওখানে বসছে। শুকাতে দেওয়া কাপড়ের ওপর বসছে। ছোট নিচু গাছের ওপর বসছে। বসছে বড় গাছের ওপরও--কিন্তু তা সুমনের জন্য নয়। সে ছোট। পাঁচ বছরের ছোট এক মানুষ। তার জন্য ফড়িং কাছাকাছি উড়ে উড়ে আনন্দ ছড়ায়। ফড়িং দেখতে দেখতে দুয়েকটা ধরে ফেলে সুমন। ফড়িঙের ডানা দুটি ধরে দৌড়ে বেড়ায়। কখনো সুতো দিয়ে বেঁধে ঘুড়ির মতো উড়িয়ে দেয় ফড়িং। এতে সুমনের আনন্দ প্রচুর। কিন্তু সে জানে না ফড়িঙের কীসে আনন্দ! আনন্দের আতিশয্যে প্রায় ফড়িং মরে যায়। তখন সুমনের আনন্দ থমকে যায়। দুঃখ লাগে। মানুষের মৃত্যুর সাথে মিলিয়ে নেয় ফড়িঙের মৃত্যু। কখনো কখনো মৃত ফড়িংকে কবর দেয় মাটি খুড়ে।  আজও একটা ফড়িং মরে গেল। সুমনের খুব দুঃখ হলো। এর কবর দেবে সে। উঠোনের এক কোণে মাটি খুড়লো লোহার পেরেক শাবলের মতো ব্যবহার করে। বাঁশের মতো কবরের ছাউনি দিতে কিছু নারিকেল পাতার শলাকা নিল। ফড়িংটাকে গর্তে রেখে তার ওপর শলাকা  ছড়িয়ে দিয়ে মাটি চাপা দিল। এসব সে দেখেছে, মানুষের মৃত্যুতে করা হয়। তবে সে মানুষের মৃত্যু খুব ভয় করে। সাদা কাফন পরিয়ে যখন মানুষের প্রাণহীন দেহ কবরে নামানো হয় তখন তার প্রাণ ভয়ে আঁতকে ওঠে। তার শিশু প্রাণ মৃত্যুর ভয়ে এতোই ...

ভার্সিটি ক্যান্টিন ও দু'টি গল্প

ছবি
  Photo Credit: https://en.wikipedia.org/wiki/Madhur_Canteen প্রতীকী ছবি: মধুর রেস্তোরা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। দেশের বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের আবাসিক হলগুলোতে ক্যান্টিনের খাবারের মান নিয়ে শিক্ষার্থীদের অসন্তোষ নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিভিন্ন অভিযোগ শিক্ষার্থীদের জীবনধারণের বাস্তবতাকে তুলে ধরে। বিশেষ করে, বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক শিক্ষার্থীরা খুব ভালো ভাবেই জানে এসব, কারণ তারাই ভুক্তভোগী। এখানে কিংবদন্তী মোল্লা নাসির উদ্দিনের গল্পে হল ক্যান্টিনের খাবার নিয়ে শিক্ষার্থীদের কিছু অভিযোগের নজির দেওয়ার চেষ্টা করছি।  ১ প্রথম গল্প বলছি নাসির উদ্দিনের অতিথি আপ্যায়ন নিয়ে। একদিন তার এক ফুফাতো ভাইয়ের শ্যালক সঙ্গে একটা বেশ বড় মুরগি নিয়ে তার বাড়িতে এল। অতিথির আনা বড় মুরগিটা দিয়ে অতিথি আপ্যায়ন করলেন নাসির উদ্দিন। দুয়েকদিন বাদে অতিথি বিদায় নিলেও যা নিয়ে এসেছিল তা খেয়েদেয়ে উসুল করে গেল। পরদিন একজন লোক এল মুরগি নিয়ে যে এসেছিল তার ভায়রা পরিচয়ে। নাসির উদ্দিন তাকেও আপ্যায়ন করে বিদায় দিলেন। তারপর দিন আরেকজন লোক এল মুরগি নিয়ে যে এসেছিল তার ভায়রার ভায়রার পরিচয়ে। নাসির উদ্দিন তাকেও খাতির ...

আন্তর্জাতিক সম্পর্কে মেনা শেখ

ছবি
Photo Credit: https://twitter.com/globaltimesnews/status/1301846415128363008 প্রতীকী ছবি: আধিপত্যবাদী স্থিতিশীলতা তত্ত্ব পল্লীকবি জসিম উদ্দীনের 'রাখালী' কাব্যগ্রন্থের কবিতা 'মেনা শেখ'। মেনা শেখ একটি সমাজচরিত্র। সমাজে তার আধিপত্য আছে। শক্তিধর মেনা শেখের ভয়ে ভীত হলেও সমাজের মানুষ তাকে নিয়ে গর্ব করে। দশগ্রামে পরিচয় দেয় মেনা শেখের গ্রামের লোক বলে। কবি মেনা শেখের আধিপত্যবাদী চরিত্রের আড়ালে সমাজের ভারসাম্য রক্ষায় মেনা শেখের অবদান তুলে ধরেছেন। যদিও শক্তিশালী মেনা শেখকে কলমের শক্তির কাছে শেষ পর্যন্ত অসহায় হিসেবে তুলে ধরেছেন। কবি মেনা শেখের সমালোচকদের বলেছেন, "একটি ভিটেয় চরছে ঘুঘু তাহার নাকি অত্যাচারে। জানি আমি কলম-পেষা। এই নিয়ে আজ দুষছ তারে। হাজার ভিটের চরত ঘুঘু সে না থাকলে মোদের গাঁয়ে, হাজার চালের খসত ছানি তোমাদের ওই কলম ঘায়ে।" (রাখালী, ১৯২৭) মেনা শেখ চরিত্রকে আন্তর্জাতিক রূপ দেয়াই এ লেখার উদ্দেশ্য! আন্তর্জাতিক সম্পর্কে 'আধিপত্যবাদী স্থিতিশীলতা তত্ত্ব' (হেজেমনিক স্ট্যাবিলিটি থিওরি) আলোচনা করা হয়। এ তত্ত্বানুযায়ী বিশ্ব রাজনীতিতে শক্তিধর কোনো দেশের আধিপত্য স্থি...

মঙ্গল-আলোক

ছবি
প্রায় সোয়া শো বছর আগে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা বহুল আলোচিত ছোটগল্প কাবুলিওয়ালা। এতে তিনি পিতৃ স্নেহের সুন্দর মানবিক উপস্থাপন করেছেন। বর্তমান সমাজ বাস্তবতায় গল্পটির অপ্রধান অনুষঙ্গ আমার নিকট খুবই গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছে। গল্পটির শেষ বাক্যগুলি এরকম, Photo Credit: https://www.kalerkantho.com/print-edition/education/2018/03/01/607966 কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাবুলিয়ালা গল্পে মিনি ও রহমতের কথোপকথনের চিত্রায়ণ। ’’... আমি একখানি নোট লইয়া তাহাকে দিলাম। বলিলাম, “রহমত, তুমি দেশে তোমার মেয়ের কাছে ফিরিয়া যাও; তোমাদের মিলনসুখে আমার মিনির কল্যাণ হউক।” এই টাকাটা দান করিয়া হিসাব হইতে উৎসব-সমারোহের দুটো-একটা অঙ্গ ছাঁটিয়া দিতে হইল। যেমন মনে করিয়াছিলাম তেমন করিয়া ইলেকট্রিক আলো জ্বালাইতে পারিলাম না, গড়ের বাদ্যও আসিল না, অন্তঃপুরে মেয়েরা অত্যন্ত অসন্তোষ প্রকাশ করিতে লাগিলেন, কিন্তু মঙ্গল-আলোকে আমার শুভ উৎসব উজ্জ্বল হইয়া উঠিল।....’’ ***বিয়ে, খৎনা, নববর্ষ, ইদ, পূজা, পিকনিক ইত্যাদি নানা উপলক্ষে আমাদের সমাজ বাদ্য, আলোকসজ্জায় যে সম্পদ অপচয় করে এতে অকল্যাণ ছাড়া কিছু দেখি না। এই অকল্যাণের হিসাব হইতে আমরা ইচ্...

ক্ষণিকের বিলাস

ছবি
সমাজ বাস্তবতার অন্যতম লক্ষণীয় বিষয় হলো নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোর উত্থান পতন। ক্ষণিকের বিলাস আজীবনের লালিত সম্ভাবনাকে শ্বাস রোধ করে। এরকম একটি উদাহরণ কাজী ইমদাদুল হকের কালজয়ী উপন্যাস 'আব্দুল্লাহ'তে পাওয়া যায়। প্রায় শত বছর পরেও বিষয়টি আরো বেশি বাস্তব হয়ে উঠেছে। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও উপন্যাসটি পড়ে সুচিন্তিত মন্তব্য করেছিলেন মুসলমান সমাজ সম্পর্কে। 'আব্দুল্লাহ' উপন্যাসের এ অপ্রধান অনুষঙ্গের কিছুটা উদ্ধৃতি দেয়া হলো। Photo Credit: https://www.amarboi.com/2015/12/abdullah-by-kazi-imdadul-hoque.html "পলাশডাঙ্গার মদন গাজীর বাড়িতে আজ মহা হুলুস্থুল পড়িয়া গিয়াছে। তাহার ভয়ানক বিপদ উপস্থিত।... মদনের অবস্থা বেশ ভালোই ছিল। তাহার খামার জমিগুলির মত উর্বরা জমি এ অঞ্চলে আর কাহারো ছিল না। গোলাভরা ধান, গোয়াল-ভরা গরু, ছাগল এবং উঠান-ভরা মোরগ-মুরগি লইয়া সে বেশ সুখে-স্বচ্ছন্দে দিনপাত করিত। তাহার জমিতে পাটও জন্মিত এবং তাহা হইতে রাশি রাশি কাঁচা টাকা পাইয়া সে কৃষকমহলে খাতির যথেষ্ট জমাইয়া তুলিয়াছিল। কাজেই জ্যেষ্ঠপুত্র সাদেকের বিবাহের সময় পাঁচজন জ্ঞাতি-কুটুম্ব একত্র হইয়া ধরিয়া...

তুমি শ্বশুরবাড়ি যাবে?

ছবি
আত্মীয় কর্তৃক বিশ্বাসঘাতকতা বহুমুখী ও ঐতিহাসিক একটি ঘটনা। হাবিল-কাবিলের ভ্রাতৃঘাতী দ্বন্দ্ব শুনে যার পরিচয় পাওয়া যায় মানবজন্মের শুরু থেকে। সব ছেড়ে শ্বশুরবাড়ি ব্যবচ্ছেদ করতে হচ্ছে এখানে। শ্বশুরবাড়ি আদরের জায়গা-এ বিশেষণের আড়ালেও ঘটে ঘৃণ্য সব ঘটনা। এখানে বাংলা সাহিত্যে সমাজের এই অপ্রকাশিত দিকটির প্রকাশের দু-একটি উদাহরণ দিচ্ছি। ১ মোহাম্মদ নজিবর রহমান সাহিত্যরত্নের কালজয়ী উপন্যাস 'আনোয়ারা'তে এক পর্যায়ে আনোয়ারার বর নুর ব্যবসার পুঁজি সহ শ্বশুরবাড়ি রাত্রিযাপন করে। আনোয়ারার সৎ মা ও বাবা লোভে অন্ধ হয়ে রাতের অন্ধকারে জামাতাকে জবাই করার পরিকল্পনা করে। নিয়তির পরিহাসে নুরের বালক শ্যালক তার জায়গায় শুয়ে খুন হয়। না জেনে বস্তাবন্দী ছেলের লাশ অন্ধকারে ভাসিয়ে দেয় হতভাগ্য শ্বশুড়-শাশুড়ি। ২ কাজী নজরুল ইসলাম রচিত বিখ্যাত গল্প 'পদ্ম-গোখরো'তে জোহরার বাবা-মা ঘুমন্ত জামাতাকে তরবারি ধরে মেয়েরই অলংকার ডাকাতি করে। টের পেয়ে সকালে বাড়ি রওয়ানা হলে বিষ দিয়ে হত্যা চেষ্টা করে। ভাগ্যের খেলায় বেঁচে যায় আরিফ। আরিফের ভাষ্যে নজরুল বলেছেন 'এত কুৎসিত এ পৃথিবী!' জোহরার জবানে মাকে বলেছেন ‘রাক্ষুসি!’ ডাকাতি...

শকুন ও সংস্কৃতির দ্বন্দ্ববিচার

ছবি
Photo Credit: https://www.clipartmax.com/middle/m2i8b1b1Z5m2i8i8_uzbekistans-emblem-uzbekistan-gerb-png/ পতাকা খামচে নয়, বরং উজবেকিস্তানে জাতীয় প্রতীকের আভিজাত্যে রয়েছে শকুন। সামাজিক বিজ্ঞান গবেষণায় Dialectics অন্যতম আলোচিত একটি পদ্ধতি। বাংলায় বলা যায় দ্বন্দ্ববিচার। কোনো বিষয়ে ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গির মতামত থেকে সঠিক মত বের করার প্রক্রিয়া হিসেবে একে সংজ্ঞায়িত করা যায়। যাহোক, এখানে শকুন নিয়ে বিভিন্ন সংস্কৃতির অবস্থান বিচার করার চেষ্টা করছি। প্রথমে শকুন সংক্রান্ত আমার অভিজ্ঞতা বলা দরকার। শেষবার সরাসরি শকুন দেখেছি অনেক বছর আগে। এক যুগ তো হবেই। স্মৃতি যদি প্রতারণা না করে তাহলে এরকম...সুগন্ধা নদীর শাখা খালের মোহনায় আটকে আছে মৃত গরু বা কিছু একটা। কয়েকটি শকুন এসে পড়েছে তার ওপর। নানাবাড়ি বেড়াতে গিয়ে এক রৌদ্রোজ্জ্বল বিকেলে দেখেছিলাম। আর দেখেছি বলে মনে পড়ে না। এরপর অনেক প্রতিবেদন দেখেছি এবং ফিচার পড়েছি শকুন বিলুপ্তি সংক্রান্ত। যায় যায় প্রাণ আমাদের সমাজে শকুন অশনি সংকেতই বহন করে। শকুন বলে গালি দিতেও শোনা যায় এখানে। নিয়মিত বিরতিতে দুর্ভিক্ষপীড়িত এ দেশের মাটিতে দস্যু-লুটেরাদের কল্যাণে শকুন সর্বদাই পে...